শনিবার, ৯ মে, ২০১৫

খেলা খেলা সারাবেলা, একী খেলা আপন মনে

ফেইসবুক ক্রমশঃ একটা যুদ্ধক্ষেত্র এবং ক্ষেত্রবিশেষে নোংরামি আর  ঝগড়াঝাঁটির জায়গা হয়ে উঠতে দেখছি। বাঙালীর সহিষ্ণুতা কখোনোই প্রশংসাযোগ্য নয়, কিন্তু এতো বেশি filth দেখতেও ক্লান্ত লাগে।খুব অপ্রীতিকর।সেজন্য ঠিক করলাম, কিছুদিন নিজের আনন্দের, ছোটখাটো মজার আর নিজের ভালোলাগা জিনিসগুলো নিয়ে লিখবো। মনের ওপর, শরীরের ওপর  চাপ নেয়ার শুধুশুধু কোনো মানে নেই। কয়েকদিন যাবত মন ভালো করার জন্য ছোটোখাটো রান্না করছি এবেলা তার কিছু ছবি। অর্থহীন পেটপুজো মাঝে মাঝে দারুণ আনন্দ দেয়। এখানে খুব ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে ক'দিন, আকাশের সাথে সবার মন ভার। আমারও। বাইরে বেরুবার যেহেতু উপায় নেই, তাই ঘরে বসে রান্নাবান্না খেলাটা আর তার ফাঁকেফাঁকে Mastermind খেলে বোরডম দূর করার উপায় খুঁজছি।

রান্নাবান্না খেলা খেলা। 

১. ছোটবেলায় চাইনিজ রেস্তোঁরায় গ্যালে অবধারিত মেনু ছিলো সবার আগে চিকেন কর্ন স্যুপ। চিলি ভিনেগার আর সয়াসস দিয়ে খুব মজা লাগতো। জ্বর হলেও মুখের স্বাদ ফেরাতে মা কিনে আনতো এই স্যুপ। জ্বরটা কেমন উৎসব উৎসব হয়ে যেতো ঘোর লাগা মাথাতেও। আহ্‌ ছোটবেলা। তো সেই পুণ্যস্মৃতি স্মরণে সেদিন হুট করেই ইউটিউব দেখে প্লেইন চিকেন কর্ন স্যুপ বানানো শিখলাম। এত্তো সোজা আর হাতের কাছে জিনিসপত্র থাকলে এতো দ্রুত তৈরি হয়, নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য লাগছিলো! শহরে ঠাণ্ডা পড়েছে খুব , সন্ধ্যেয় কাজঅন্তে হুড়মুড় বানিয়ে চিলি ভিনেগার দিয়ে আরও হুড়মুড় করে খেয়ে সোজা লেপের তলায়! আর বানালাম তরমুজের রস, কমলা আর বীটরুট দিয়ে। টকটকে রক্তলাল রঙটা খুব টানছিলো। এর মধ্যে দিলাম এক্টুস খানিক হোয়াইট ওয়াইন। বীটরুটের বুনো পাঁশুটে স্বাদটা কাটাতে। জম্পেস! শীতের খুব ভালো টনিক! 



২. শুধুমুধু চিকেন কর্ন স্যুপ তো হলো। এটাকে আরেকটু আকর্ষণীয় করা যায় কি করে ভাবতে ভাবতে পরের দিন, শেষ করে নামানোর সময় বেবি স্পিন্যাচ দিয়ে দিলাম। ওরে মজা! আই লাভ দিজ স্মল এনহ্যান্সমেন্টস। 
বিকেলে বৃষ্টির ছাঁটে বোর হতে হতে ফ্রিজ খুলে দেখি একমাস আগে কেনা পাফ পেস্ট্রি শিট আছে। এই বস্তু কেন কিনেছিলাম জানিনা। কিছু বানাতেও জানিনা এটা দিয়ে। চিকেনেরটুকরো আর গাজরের মধ্যে থাই স্পাইস দিয়ে ভেজে ওইগুলোর মধ্যে পুরে বিশ মিনিট বেইক করলাম। পাফ তো পাফ। ফুলে ওঠা দেখতে দেখতে রবি ঠাকুরের গান শুনছিলাম। বের করতে গিয়ে গানের আতিশয্যে হাত পুড়িয়ে ফেলেছি। তাতে কী! খেতে দারুণ হয়েছিলো।


৩. এর ক'দিন পর, আজ সন্ধ্যেয় সাহস আরেকটু বেড়েছে। কেননা দেখেছি পাফ পেস্ট্রি কী করে ফোলে। আবারো ছোটবেলার গল্প। নিউমার্কেটে অলিম্পিয়া নামে একটা বেকারি ছিলো। সেখানে বছরের প্রথমে বইখাতা কেনার সময় যেতাম মা'র সাথে। কেনাকাটা হলে এই দোকানটা আর তাদের ফুলো ফুলো প্যাটিস। আর আম্মার আধখাওয়া ফান্টার বোতল্টা কখন হাতে পাবো সেই সতৃষ্ণ চেয়ে থাকা। খুব মনে পড়লো ছোটবেলাকে। তাই একদম ওরকম করে মাংসের পুর দিয়ে জাস্ট একটা ফোল্ড করে প্যাটিস বানালাম। বড় বড়। সাথে সেই তরমুজ বীটরুটের রস।

৪. সমস্ত খাওয়া দাওয়া আর রান্নাবান্নার ছবি। একা একা থাকাটা আর নিজে নিজে নতুন নতুন জিনিস (হোক সে যতই পুরনো রেসিপি আমার কাছে তো ব্র্যান্ড নিউ) ট্রাই করা অনেক মন ভালো করা একটা প্র্যাক্টিস। আর পেট খুশ তো মন খুশ ! 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন