বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৪

২০১৪: বিষণ্ণতার দিনলিপি-২

১. নেক্টারিন- চারটা- পাকা বা আধাপাকা- ফুড প্রসেসরে পিউরে(puree) করে নিতে হবে

২. কাচা আদা অল্প একটু কুচিকুচি করে কেটে টুকরো করা হাড় ছাড়া মুরগীর মাংসে মেশাতে হবে। তার মধ্যে পিউরে টা ঢেলে দিয়ে একটু এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল দিয়ে কচলে মচলে ম্যারিনেট করে ননস্টিক ফ্রাইং প্যানে দিলাম।

৩. এর মধ্যে দু’টো শুকনো মরিচ ভেঙে আর কাঁচামরিচ কয়েকটা কুচিয়ে দিলাম জাস্ট ঝালটা বেশি হবার জন্য কারণ মিষ্টির ভেতর ঝালটা হরগৌরী J। দু’তিনটে আস্ত জিরের টুকরো আর গরম মশলা পাউডার নামে এক বস্তু পাওয়া যায় সুপারমার্কেটের স্পাইস সেকশনে সেগুলো দিলাম আর লবণ মেশালাম। ওহ, আমি বড় করে ফুলের মতো করে কাটা পেঁয়াজ দিয়েছিলাম, যেটা চাইনিজ রেস্ট্যুরেন্টে দেয় একদম সবজির মতো দেখতে, না দিলেও ক্ষতি ছিলোনা পরে খেয়ে বুঝেছি। দিলেও খেতে ভালোই হয়।

৪. আধাঘণ্টা বা বিশ মিনিট মতো মাংস সেদ্ধ করলাম। আর নামানোর মিনিট পাঁচেক আগে সবুজ রং ভালোবাসি বলে পার্সলি পাতা ছড়িয়ে দিলাম।

আমি নিজে না জেনে আজ যেটা তৈরি করলাম, সেটার নাম নেক্টারিন চিকেন হ’লে মন্দ হয়না, এটা ভাবলাম। জিনিসটা হাতরুটি দিয়ে খেতে বেশ হয়েছিলো। চাইলে আরও কম মশলা, বেশি মশলা অনেক রকম হেরফের করা যায়, কিন্তু আমার টেস্টের জন্য একদম পারফেক্ট ছিলো। নতুন বছরে এটাই আমার প্রথম আবিষ্কার। অনেস্টলি। আজ সারাদিন বিশাল কাজের মধ্যে এইই হ’লো যুদ্ধজয়। একটা ফুডব্লগ খুলবো না’কি ভাবছি। বাংলা আর ইংরেজি দু’টোই আমার ভালো লাগে কিন্তু বাংলায় ইংরেজি রেসিপি দিলে সেটা ক’জনে পড়বে আর পছন্দ করবে সেও এক কথা। প্রযুক্তি এগিয়ে গ্যাছে বহুদূর, রিচার্ড ব্র্যান্সন আমাদের মহাশূন্যে বেড়িয়েও আনতে চাইছেন উপযুক্ত পয়সাকড়ির বিনিময়ে, কিন্তু কী একটা জাত আমরা- ইন্টারনেটে এখনো বাংলাটাকে ছড়িয়ে দিতে পারলাম না ওভাবে। ইংরেজিকে যে এতো ইন্টারন্যাশনাল বলি, সেটাতো আর একদিনে হয়নি। এতো এতো বাংলাভাষী সাড়া জগতজুড়ে, আমার চেয়ে হাজার গুণে দক্ষ টেকি পোলাপানরা সারা পৃথিবীর আনাচে কানাচে – pussy chay pussy chai বলে কাদের মোল্লার ফাঁসির জন্য প্রাণপাত করে দিচ্ছে বাংরেজিতে, বাংলাটাকে সাইজ করার জন্য যদি একটু কিছু করতো!

গত বছরের প্রাপ্তির খাতায় কিছুই কি  নেই- ভাবতে ভাবতে ডিক্যপ্রিওর উলফ অফ ওয়াল স্ট্রিটের রাউন্ডটেব্‌ল বৈঠকী দেখছিলাম মার্টিন স্ক্ররসেজির সাথে। চকিতে মনে পড়লো, গতবছর ওর জীবনী ঘাঁটতে ঘাঁটতে নেটেঘঁটে খুঁজে পাওয়া What’s Eating Gilbert Grape এর কথা। অনেকদিন পর, একটা ছবি ছুঁয়ে গিয়েছিলো অনেকক্ষণের জন্য। আমার, তোমার, তোর, সবার- সেই পুরনো কাঠের বাড়ি, দুঃখ আর সুখ, মিষ্টি আর তেতো জীবন, নিস্তরঙ্গ জীবনে হঠাত ঢেউ তোলা প্রেম, আর বাবুনটুটুর মতো অটিস্টিক কিশোর- ডিক্যাপ্রিও। সেই গ্রামের ধারে বসে ছোট্ট ভাইটাকে নিয়ে আমারো বাঁশি বাজাতে মন চাইছিলো-মনে হ’লো ২০১৩ র পুরোটা হয়তো বৃথা যায়নি।

মৌনব্রত অবলম্বন করছি গত দু’দিন ধরে। ভালোই লাগছে। কুৎসিত চিৎকার চেঁচামেচি আর ঝগড়ার চেয়ে সেটা হাজার গুণে শ্রেয়তর। গতবছর আমার আরেক আবিষ্কার Passenger. ছোটোখাটো মানুষের ছোটখাটো সুখ, ছোটোখাটো দুঃখ-

Said we've got holes in our hearts, we've got holes in our lives
We've got holes, we've got holes but we carry on
Said we've got holes in our hearts, we've got holes in our lives
We've got holes, we've got holes but we carry on


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন