পর্ব ৩,৪,৫
৬
হলরুমটা বিশাল।
মাঝের সারির চেয়ারগুলো থেকে মঞ্চের কার্যকলাপ দেখা একটু দুষ্কর।আরেকটু লম্বা হবো
কবে, ইশ্শ্... ভাবতে ভাবতে কুশি বারবারই ঘাড় উঁচিয়ে স্টেজে কি হচ্ছে না হচ্ছে
দেখার চেষ্টায় রত। আইভী রহমান টুকটাক স্বামীর সাথে কথা বলছেন, আমিন রহমান শনিবারের
এই বিকেলটায় অনেকদিন পর স্ত্রী আর মেয়েদের সঙ্গ উপভোগ করছেন। ফার্মাসিউটিক্যাল
কোম্প্যানির ব্যস্ততা তাঁকে অল্পক’টা দিন দেশে থাকতে দেয়। চার বছরের ছোট্ট কঙ্কা
বাবার কোল, মায়ের কোল এক্কাদোক্কা করছে।
“কি’রে আমিন, রেজা
ভাইয়ের বাসার অনুষ্ঠানের পর ডুব দিলি যে?”
রাশভারী
ভদ্রলোক,টাকমাথা,সোনালী রিমের চশমা,পাজামা-পাঞ্জাবী আর মেরুন রঙা কাশ্মিরী শাল,
গুরুগম্ভীর কণ্ঠ...বাবা উঠে দাঁড়িয়ে হাত মেলাচ্ছে, কুশি গলাটা শুনে মুহূর্তেই
সতর্ক! গোঁফের ফাঁকে গজদন্তে হাসির ঝিলিক, মা’র কাঁধে হাত রেখে শুভেচ্ছা বিনিময়,
কুশির পৃথিবী কি দুলে ওঠে কিছুটা? বাবামা সবাই হাসছে, ছোট্ট কঙ্কাটাও ওই লোকটার
কোলে! কুশি প্রাণপণ চেষ্টা করে মা’র ডাক উপেক্ষা করতে। স্টেজের দিকে নিবিষ্ট মনে
তাকিয়ে তৃণা আপিকে খোঁজে। আফটার অল, এটা তৃণা আপির গ্র্যাজুয়েশনের অনুষ্ঠান,
সব্বাই এসেছে। ওয়েল, অলমোস্ট সবাই। মা’র তৃতীয় ডাকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করা যায়না,
তাকাতেই হয়।
অনিচ্ছায় উঠে
দাঁড়িয়ে সালাম দিতে হয়, পড়াশোনার ফিরিস্তি মা’ই দিয়ে দেন- শান্তি!
খুব অস্বঃস্তি
লাগছে তার, লোকটার চোখের দিকে তাকাতে পারছেনা সে।
তৃণা আপি
সার্টিফিকেট, ক্রেস্ট হাতে ছবি তুলছে। সবাই হাসছে। চুনি খালা, রাশেদ খালু, এমি সবাই
তাকে জড়িয়ে ধরে, তৃণাপি, সবার মধ্যেখানে-
“কি’রে কুশি,
তোর মুখ এর’ম হাঁড়িপনা কেন, রেজাল্ট ভালো করেছিস, আমি পাশ করলাম, কী স্মার্ট
দেখাচ্ছে তোকে স্কার্টটাতে! একটু হাস্ না বাপু, ছবিগুলো সুন্দর আসুক!” তৃণা
জাপ্টে ধরে ওকে, সবার সাথে দাঁড়িয়েও মলিন একটুকরো হাসি ঝোলে ঠোঁটে। ওপাশ থেকে
লোকটা একদিকে বাবা আরেকদিকে মায়ের কাঁধ ধরে আছে। বাবামা দু’জনেই কুশিকে ডাকেন
মধ্যেখানে যেতে। “ফ্যামিলি পোর্ট্রেটে ফ্যামিলি ফ্রেন্ড না থাকলে কি জমে, এসো দেখি
ইয়াং লেডি, মায়ের মত সুন্দরী হয়ে উঠছো দিনদিন”- হাহাহা করে নির্লজ্জের হাসি হাসছে
লোকটা!বাবাও হাসছে, মা’র চোখে প্রশ্রয়ের হাসি।
আর সহ্য হয়না
কুশির!
“মা, তুমি
প্লিজ এদিকে এসো, প্লিজ।” একরকম জোর করেই টান দিয়ে মা’কে খালা আর তৃণাপি’র মাঝখানে
টেনে আনে ও।
“কি অসভ্যতা
হচ্ছে কুশি, বড় হচ্ছো, ম্যানার্স শেখোনি” মায়ের রাগতঃ গলাকে যথাসম্ভব উপেক্ষা করে
মা’র গলা জড়িয়ে ধরে “মা, প্লি-ই—জ, চুনি খালা তোমার আমার একসাথে ছবি নেই, একটাও।
বাবা থাকুক বন্ধুর সাথে, তুমি প্লিজ আমার সাথে। প্লিজ। প্লি-ইইইইইই-জ।”
“মেয়ে তো খুবই
আদুরে হয়েছে আমিন” অপাঙ্গে তার দিকে তাকিয়ে বাবার দিকে কথা ছুঁড়ে দেন
ভদ্রলোক,“পড়তে তো আমার এখানেই পাঠাবি না’কি? ইনফ্যাক্ট রেজার ছেলে সমুর
রেকমেন্ডেশন লেটার তো আমিই লিখে দিলাম, এবার তৃণারটা লিখছি, আর তোর মেয়ে যাবার সময়
নিশ্চয়ই ওরটাও?” বাবা হেসে ওঠেন,“এতো আগেই বাইরে পাঠাবার চিন্তা করছিনা, একটু বড়
হোক, বুদ্ধিশুদ্ধি হোক”-
কুশির কান
পর্যন্ত জ্বলছে! এই লোকটা এই ইউনিভার্সিটির ভিসি? ওহ্ নো!
এই লোকটা
সমুদাকে লেটার অফ রেকমেন্ডেশন দিয়েছে?
এই লোকটা??
মায়ের কাঁধে হাত রাখছিলো! বাবার সাথে হাসছে! কঙ্কাটাকে জড়িয়ে ধরে পুরুষ্টু গোঁফ
চেপে ধরে চুমু খাচ্ছে, বমি আসে তার দেখে!
না না না না না
না না!!!
ভীষন জোরে
চিৎকার করে উঠতে চায় চোদ্দ বছর।
কিন্তু
ম্যানার্স আর সভ্যতা, অনুষ্ঠান আর আলোর ঝলকানি, হাসি আর আনন্দ গলা পর্যন্ত উঠে আসা
চিৎকারটাকে টুপ করে গিলে ফেলে।
ফেলতে বাধ্য
করে।
এই লোকটার কাছ
থেকে না সমুদার তাকে রক্ষা করার কথা ছিলো?
সে কেন নেই
এখানে, এখন?
ঠিক এই সময়টাতে
একমাত্র সমুদাকে সে বলতে পারতো লোকটার কথা!
পৃথিবীর আর
কাউকে তার ভালো লাগছে না এখন। পছন্দ হচ্ছেনা।
পান্না
খালা,রেজা খালু,ইয়ামিন ভাইয়া–সারে সারে মুখ- শুধু যেই মুখটা দেখলে তার মুখ আলো হয়ে
উঠতো এখন সেই মুখটা নেই।
চারপাশে তাকিয়ে
একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফ্যালে কুশি।
তারপর চুপ করে
বসে পড়ে পাশের চেয়ারটাতে।
অনুষ্ঠান,
হাসি, গান, শব্দ, ঝঙ্কার- সব মিথ্যে হয়ে গ্যাছে।
সব।
সমুদা তাকে
বাঁচাবে না?
সমুদা অনেক
দূরে চলে যাবে?
অনেক?
৭
বাইরে ঝিরিঝিরি
তুষার পড়ছে, ঘরের ভেতরে যদিও হিটারের উষ্ণতা। মার্চের মাঝামাঝি, এখনো তাপমাত্রা
শূন্য ডিগ্রির নিচে যায় প্রায়ই, বৃষ্টি আর কনকনে ঠাণ্ডা হাড় কাঁপিয়ে দেয়।
কেম্ব্রিজ শহরে সমুদ্রের কাছে ছোট্ট এই অ্যাপার্টমেন্টটা গত দু’বছর ধরে তার
আবাসস্থল। সমুদ্র দেখা যায় বলে প্রথমদিকে উচ্ছ্বাসের সীমা ছিলো না, শুনেছিলো
সমুদ্রের পাশে ঠান্ডাও না’কি কম হয়। কীসের কী! নাতিশীতোষ্ণ দেশ থেকে আসা শরীরের এই
ঠাণ্ডায় খাপ খাওয়াতে আরো হাজার বছর লাগবে বলে তার ধারনা।
লাল রঙের একটা
কম্বলে কোমর থেকে পা অবধি ঢাকা। কনুইয়ে ভর দিয়ে আধশোয়া অবস্থা থেকে একটু উঠে বসে।
কম্বলের বাকি অর্ধেকটায় গুটিশুটি মেরে ঘুমে বিভোর ন্যাটালি। সোনালি একরাশ চুল ছড়িয়ে
আছে বালিশের চারপাশে। চুলের ফ্রেমে ঘেরা মুখটার দিকে তাকিয়ে পাতালপুরের বন্দিনী
রাজকন্যার ছবি চোখে ভেসে ওঠে। এতো কোমল, লাবণ্যময়। চোখের নিচে কালি জমেছে,
ক্লান্তি আর অবসাদের। তারও এক অবস্থা।
গত দু’টো বছর
কিভাবে কেটে গেছে, সে নিজেও জানেনা। দিনে আঠারো ঘন্টা ল্যাব, আট থেকে দশ ঘন্টার
ক্লাস, চব্বিশ ঘণ্টায় কখনো মাত্র একবার খাওয়া, টিউটরিং, রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে বা
মাত্র এক ঘন্টা ছেঁড়াছেঁড়া ঘুমের পর আবার ল্যাবে ছোটা – একসময় তার মনে হচ্ছিলো সে
বোধহয় পাগল হয়ে যাবে! কোন মানুষের পক্ষে এরকম অমানুষিক জীবন যাপন করা সম্ভব নয়! এক
একবার গভী্র রাতে কম্পিউটার মনিটরের দিকে তাকিয়ে তার মনে হ’তো ফিরে যাই। অনেকদিন
তীব্র বিষাদ আর হতাশায় ডুবে ছিলো, পরিশ্রম তাকে অবসাদগ্রস্ত করে দিচ্ছিলো, তার
চেয়ে বেশি করেছিলো একাকীত্ব। এখানে এসে অল্প কিছু চেনাজানা তার হয়েছে, কিন্তু গভীর বন্ধুত্ব হওয়ার সুযোগ হয়নি তেমন কারো
সাথে। কাজের তীব্রতম চাপের সময় তার ভেতরটা খুব হু হু করতো। পরবাস- এই অনুভূতির
সাথে একাত্ম হওয়া খুব কঠিন ছিলো।
এখনো আছে।
এই অনুভূতি
থেকে তাকে প্রথম বাঁচায় ন্যাটালি। ল্যাবে কাজ করতে যেয়ে পরিচয়, দু’টো সাব্জেক্ট
একই সাথে করছে তারা। সহজ, অনাড়ষ্ট ভঙ্গীতে যেদিন প্রথম মুখের আধখাওয়া আপেলটা ওর
মুখে গুঁজে দিয়েছিলো ও সকাল থেকে কিছু খায়নি জেনে, কেমন যেন করে উঠেছিলো ভেতরটা।
টুকটাক
কথাবার্তা, কফিশপ, বই-সিডি আদানপ্রদানে বন্ধুত্ব হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু
সামিন বোঝে, ওর ভেতর আড়ষ্টতা আজও রয়ে গেছে। ন্যাটালির বাবা ইটালিয়ান, মা
অ্যামেরিকান। দু’পক্ষের সৌন্দর্যের সবটুকু বিধাতা তাকে উপুড় করে দিয়েছেন।
আশ্চর্যজনকভাবে, তার মাথা খুব পরিষ্কার। যে পরিমাণ সূক্ষতায় সে ল্যাবের সেল নিয়ে
কাটাছেঁড়া করে,সামিন মুগ্ধ হয়। এবং এই অনায়াস স্বাছন্দ্যে তার এতোটুকু গর্ব নেই।
তার বয়সী অন্যান্য অনেক ছেলেমেয়েদের “রুড এন্ড পম্পাস” অ্যাটিচ্যুড এর এতোটুকু
ন্যাটালির নেই বলেই দিনে দিনে আরো বেশি আকৃষ্ট হয়েছে সামিন। এখনও বাঙালি জড়তা তার
কাটেনি, কিন্তু মেয়েটা নির্মল আচরণে ওকে সহজ করার অনেক চেষ্টা করে।
এই যেমন আজ।
কাজ করতে দেরী হয়ে গেলো, আকাশ আঁধার করে তুষার ঝরতে শুরু করলো। ন্যাটালি ক্লান্ত
হয়ে খুব সহজে কম্বলটা টেনে নিয়ে বললো, আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে স্যাম, তুমি বাকী
কাজটুকু একা করো প্লিজ, আমি একটু গড়িয়ে নেই। এর আগে কখনো কোনো মেয়ের সাথে এক
বিছানায় নিজেকে কল্পনাও করেনি সে। কিন্তু ন্যাটালির ব্যবহার অতি সহজ, ওকে না বলাটা
নিজের কাছেই কেমন ইডিয়টিক মনে হচ্ছিলো। যেন এটাই স্বাভাবিক, এমনটাই ঘটা উচিত।
ঘুমন্ত
ন্যাটালির মুখটা দেখতে দেখতে হঠাৎ বুকের ভেতরটা মুচড়ে ওঠে তার... “আধেক ঘুমে নয়ন
চুমে” মনে পড়ে যায়...পাশ ফিরে মেয়েটাকে দুহাতের ভেতর জড়িয়ে ধরে...চোখের পাতায় ঠোঁট
ছোঁয়ায়... উষ্ণ নিঃশ্বাসের ছোঁয়া তাকেও উষ্ণ করে তোলে। পাতলা গোলাপি ঠোঁটে ঠোঁট
ডুবিয়ে জিভ দিয়ে আলতো করে বুলিয়ে দেয় আদর। ঘুমের গভীর থেকে জেগে উঠছে মেয়েটা, ওকে
জড়িয়ে ধরেছে আস্তে আস্তে। সামিন চোখ বন্ধ করে ফেলে, আরো নিবিড় করে জড়িয়ে ধরে
অস্ফুটে বলে ওঠে “কুশি, কুশি, কুশি...”
“হোয়াট ইজ
কুশি, স্যাম?” আধোঘুমে নরম গলায় জিজ্ঞাসা, সামিন আরো জোরে আঁকড়ে ধরে কাঁধ, নিবিড়
বেষ্টনীতে বেঁধে ঠোঁট দিয়ে নিষ্পেষিত করে
ন্যাটালির ওষ্ঠাধর। কথা বলতে দিতে চায়না, ঘোরলাগা জিভ ছোঁয়ায় স্বর্ণকেশিনীর গলায়,
কণ্ঠার হাড়ে। টের পায় পুরুষত্বের উত্থানের ইঙ্গিত।
পাগল হয়ে যায়
এত দিনের বুভুক্ষু, ক্লান্ত শরীর।
আশ্রয় খোঁজে
শ্বেতশুভ্র জুঁইফুল বুকের খাঁজে, আর বারেবারে বলে “কুশি, কুশি, কুশি...”
“তুই কই
কুশি?...কুশি...কুশি...”
শ্বেতাঙ্গিনী
এবার সজাগ। সামিনের মাথার পেছনে চুল মুঠো করে ধরে ওর মুখটা উঁচু করে তোলে।“হেই...ওয়াট
ডাজ কুশি মিন?”
দু’জনের
নিঃশ্বাস বিনিময় হয়- দম আটকে রাখা গলায় জবাব দেয় সামিন “...কুশি?”
ঘোর লেগে আছে
তার চোখে, শরীরী উত্তেজনা তুঙ্গে,আর কিছু খুঁজে না পেয়ে বলে, “কুশি...কুশি...মিন্স
খুশি সুইটি, খুশি... হ্যাপি...আই অ্যাম হ্যাপি...আই ম জাস্ট হ্যাপি...”
গলা আটকে আসে
তার।
ন্যাটালি
মিষ্টি হাসিতে বুকের ভেতর টেনে নেয় ওর মাথাটা, জড়িয়ে ধরে মমতায়।
কিন্তু সামিনের
গলার কাছে তেতো একটা অনুভূতি উঠে আসে।
শ্বাসবায়ু আটকে
যায়।
ন্যাটালির অন্ধকার
বুকের খাঁজে, প্রায়ান্ধকার অতীতে একটা সরল অভিমানী মুখ। দু’টো পরিষ্কার টলটলে চোখ,
হরিণছানার চাঞ্চল্য। নীল শাড়ি, হলুদ চন্দ্রমল্লিকা। স্কেলের বাড়িতে কেঁপে ওঠা।
চকোলেটের আঠা লাগা অভিমানী ফোলা ঠোঁট মুছে দিয়েছিলো একবার। কী লজ্জা পেয়েছিলো
কুশি! তারপর থেকে ওর সামনে আর চকোলেট খেতোনা।
নেভিব্লু
ব্লাউজের ফাঁকে ফর্সা কাঁধ। ঠোঁটের নিচে কেঁপে ওঠা শরীর।
প্রথম যেদিন
পড়তে এসেছিলো, বাস্কেটবল শর্টস আর গেঞ্জি পরা, ঘর্মাক্ত মুখ। ঠোঁট টিপে চোখমুখ
শক্ত করে বসেছিলো। সামিনের মা জোর করে মুখহাত ধুইয়ে দেয়ার পরও জ্বলজ্বল করছিলো বাম
গালে পাঁচ আঙুলের চড় বসে যাওয়ার দাগ। আইভী খালামণি রাগতঃ গলায় বলেছিলেন “দ্যাখোনা
পান্নাবু, এত বলিঃ তোর চোদ্দ, কঙ্কার তো মাত্র চার, তারপরও গাড়ির মধ্যে খামচাখামচি
ফালতু কী এক পোস্টার আর বই নিয়ে। কঙ্কা ছিঁড়ে ফেলেছে, আর তাতেই উনি ছোট বোনকে
কিলিয়ে, ঘুষিয়ে দুনিয়া উদ্ধার করে দিচ্ছেন। দিয়েছি এক চড়। অসভ্য বাঁদরটাকে সমু যদি
একটু পোষ মানাতে পারে।”
নতুন পরিচয়, সেদিন
প্রথম এ বাড়িতে সামিনের সামনাসামনি। কোনরকমে ওই থমথমে গলাতেই বলছিলোঃ “ওটা অর্ণব
ভাইয়া খুব যত্ন করে... স্টুপিড কঙ্কাটা... ইডিয়ট...টিনটিন এর পোস্টার...”
কৌতুকে ঝিকমিক
করছিলো সামিনের চোখের মণি। হাসি চাপতে না পেরে মুখ টিপে তার তাকানো দেখে লজ্জায়
মুখ নিচু করেছিলো কুশি।
আর কোনোদিন,
তার মনে পড়েনা, চোখে চোখ তুলে চেয়েছিলো কি’না। নিজ থেকে।
বড্ড ভয় পেতো
তাকে। বড্ড ভয় পাওয়াতো মেয়েটাকে।
সুগন্ধী বুকের
খাঁজ থেকে মুখ তুলে নিজের চারপাশ কেমন ঝাপসা দ্যাখে সামিন। চোখ কি বাষ্পাচ্ছন্ন তার?
গত দু’টো বছরে
একবারও যার কথা ভাবেনি, জোর করে চাপা দিয়ে রেখেছে, মনে আসলেও নিজেকে কঠোর হাতে দমন
করেছে- আজ কেন সেই চোখ, সেই ঠোঁট আকাশে বাতাসে, চারপাশে?
কেন প্রগাঢ়
মমতার আলিঙ্গনের মধ্যেও তার ডুকরে কেঁদে উঠতে ইচ্ছে করে?
কেন ওই বাচ্চা
মেয়েটা হাজার মাইলের ব্যবধান ঘুচিয়ে এই বুকের সুগন্ধীটুকু চুরি করে নিয়ে যায়?
শরীরের
উত্তেজনাটুকু ফুরিয়ে গেছে, নিস্তেজ সামিন ন্যাটালির বুক থেকে উঠে বালিশে মুখ গোঁজে।
কাঁদতে পারেনা,
শুধু চাপা আর্তনাদ করে গুমরে গুমরে।
বুক ফেটে যায়
তার।
শুধু ভাবে, আমি
কুশির সাথে কী করলাম? ওকে একা ছেড়ে দিয়ে কেন এলাম?
কাদের কাছে?
কীসের মধ্যে?
ও আমাকে বলেছিলো,
কেন চলে যাচ্ছেন...ওহ্...ওহ্...নো...
ন্যাটালি
কান্নার কারণ বোঝেনা, কিন্তু হাহাকারের আর্তিটুকু বোঝে।
আস্তে আঙুল
বুলায় সামিনের রেশম চুলে।
সামিন হঠাৎ
বলেঃ ন্যাটালি আমাকে একটু বইয়ের দোকানে নিয়ে যাবে, প্লিজ? এখানকার সবচেয়ে বড়
দোকানটায়?
“উড ইট বি
ওপেন?” ঘড়ি দেখে আশ্বঃস্ত হয়, “ইয়া উই স্টিল ক্যান মেইক ইট। বাট ওয়াট’স দ্য হারি,
ডিয়ার?”
আছে, হারি আছে।
অনেক হারি।
সেটা কি ওকে
বোঝানো যায়?
*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***
*** ***
বইয়ের দোকানটা
খুব নামকরা চেইন। কাউন্টারে এতো রাতে শুধু বয়স্ক এক ভদ্রমহিলা বসে কীসব লেখালেখি
করছেন। প্রশ্নের উত্তরে পেছন দিকের সেকশনটা দেখিয়ে দিলেন। একটু হেসে বললেনঃ “লেট
মি গেস। ইস্টার গিফট? কাজিন অর নেফিউ?”
এই প্রথম
অনেকক্ষণ পর প্রাণ খুলে হাসলো সে।
“নাইদার। সুইটহার্ট।"
“আউউ, সো সুইট!
শি স্টিল রিডস দিইজ?”
“শি ইজ
সিক্সটিন...”
“ওহ... ইউ লাকি
ডগ!” ভদ্রমহিলার আকর্ণবিস্তৃত হাসির উত্তরে কাঁধ ঝাঁকিয়ে নির্দিষ্ট সেকশনের দিকে
হাঁটা দেয় ও।
গিয়ে দেখলো,
কপাল ভালো। হ্যাঁ, চব্বিশটাই আছে। একদম নতুন। বাঁধাই করা। একটা বই খুলে বুক ভরে
শ্বাস নেয় সে।
কী সুন্দর
গন্ধ!
মন ভালো হয়ে
যায়।
অনেক দূরে,
একটা দো’তলা বাড়ির বোগেনভিলিয়া ঘেরা বারান্দায় বসে এক কিশোরীর (না’কি সদ্য তরুণীর?)
আলো ঝলমলে মুখ, বিস্মিত চোখ কল্পনা করে সে।
কেমন লাগবে
কুশির যখন একটা একটা করে বইগুলো খুলবে? জানবে যে সবগুলো ও পাঠিয়েছে? শুধু তার
জন্য? মুখটা ছোট্ট গোল হাঁ হয়ে যাবে...মা-বাবা সবাইকে ডেকে দেখাবে। সামিনের মা’কে
চুমো দিয়ে ব্যস্ত করে তুলবে।
তার চোখ
অকারণেই আবার জ্বালা করে ওঠে।
একবার যদি
কুশিটাকে পেতো, বুকের সাথে জাপ্টে ধরে রাখতো এই মুহূর্তে!
৮
কুশির জন্য
পাঠানো মোড়কবন্দী বইগুলো নিয়ে একটু তড়িঘড়ি কররেই তৈরী হচ্ছিলেন পান্না রেজা। হঠাত
দরজায় কলিংবেলের পরিচিত শব্দ।
টুঙ টাঙ টিঙ-
ঠিক তিনবার!
সচকিত হ’ন তিনি।
কিন্তু তা’তো
সম্ভব নয়!
যার এভাবে
বাজানো অভ্যেস সে’তো গত দু’বছর চোখের আড়াল। মনের আড়াল করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েও
তিনি ব্যর্থ। তাই বেডসাইড টেবিলে হাসিখুশি ছবিটা প্রতি রাতে দেখেন আর নীরবে
দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।
কাজের ছেলেটা
দরজা খুলে দিতেই তাঁর মুখ হাঁ হয়ে যায় বিস্ময়ে! উস্কোখুস্কো চুল, মুখে ক’দিনের
না’কাটা দাড়ি, লাল চোখ, অনিদ্রার ক্লান্তি – কিছুই মায়ের চোখ এড়ায় না। তা ছাপিয়েও
তীক্ষ্ণ চোখ নাক মুখের শীর্ণকায় লম্বা ছেলেটি দুর্দান্ত সুপুরুষ; এই অবাক
মুহূর্তেও সেই বোধ তাঁর ভেতরটাকে গর্বে ভরিয়ে তোলে। চেহারার ওপর দিয়ে এত ধকল যাওয়ার
পরও কাউকে যে এ-ত সুন্দর লাগতে পারে, আজকের আগে তাঁর অজানা ছিলো!
অতি নাটকীয়তা
মা বা ছেলের কারোরই ধাতে নেই, তারপরেও তিনি অনুভব করেন, তাঁর হাত পা কাঁপছে!
সামিন ছুটে
এসে, কোনো কথা না বলে তাঁকে জড়িয়ে ধরে। বুকের ভেতর ঢুকে যেতে চায় ঠিক সেই
ছোট্টবেলার মতো। সমস্ত গ্লানি, অভিমান, দুঃখ, রাগ - মা’কে জড়িয়ে সে যেন জমাট বাঁধা
বরফ গলিয়ে ফেলবে। বিড়বিড় করে আবোলতাবোল কী বকে যাচ্ছে, সে নিজেও জানেনা।
অনেকক্ষণ পর,
চুলের ভেতর বিলি কাটতে কাটতে চোখের জল আর বুকের বল মিলিয়ে যেটুকু উদ্ধার করা যায় তাতে
তিনি যারপরনাই বিস্মিত হ’ন।
কুশি???
কুশিকে তো
সামিন সবসময় ছোটবোন বা দুধভাতের মতোই উৎপাত মনে করতো। আর সেই বাচ্চা মেয়ে একে দেখে
ভয়ে কীরকম সিঁটিয়ে যেতো তাঁরা সবাই সেটা নিয়ে কম হাসাহাসি করতেন না। এমনকী, সামিন
চলে যাবার পরেও তার করে দিয়ে যাওয়া রুটিন ফলো করা হচ্ছে কি’না, নাহ’লে কি কি
শাস্তি দিতে হবে এগুলোর সব ফিরিস্তি মা আর খালার কাছে দিয়ে যাওয়া হয়েছে এই বলে
তাঁরা সেদিনও খেপিয়েছেন মেয়েটাকে।
আর আজ কী’না
তাঁর চরম ম্যাচিওর্ড ছেলে, সারাক্ষণ জীবন, ক্যারিয়ার নিয়ে চোখমুখ কুঁচকে জ্ঞান
দেওয়া ছেলে, পুঁচকে এক ষোল বছরের মেয়ের জন্য লাখো মাইল দূর থেকে ছুটে এসে তার কোলে
মুখ গুঁজে কাঁদছে!
ব্যাপারটা
অবিশ্বাস্য এবং কৌতুককর! এই যুগপৎ আবেগ কীভাবে সামাল দেবেন সেটা নিয়ে চিন্তা করার
আগেই তাঁর ভীষণ হাসি পেয়ে যায়। হাসির দমকে শরীর কাঁপছে তার, এই অবস্থাতেই তিনি
বলেনঃ “কিন্তু বাবা, তাই বলে টিনটিন? তুই টিনটিনের পুরো কালেকশন দিয়ে বাচ্চা
মেয়েটাকে ভুলাবি? হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ...”হাসি কিছুতেই থামছেনা তার! সামিন
কিছুক্ষণ গাঁইগুঁই করে, কিছুক্ষণ বিব্রতভাবে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে এটা
সেটা বলে,তারপর একেবারে হঠাৎ করেই, মা’র হাত চেপে ধরে বলেঃ “মা, তোমার মনে আছে
প্রথম যেদিন কুশি এ বাড়িতে এলো পড়তে? টিনটিনের একটা বই আর পোস্টারের জন্য আইভী
খালামণি ওকে মেরেছিলেন? ওর ওই গালে পাঁচ আঙুলের দাগ বসে যাওয়া কান্না কান্না মুখটা
আমি আজও দেখি মা। স্বপ্নে দেখি, জেগে থাকলেও দেখি। আমার খুব কষ্ট লেগেছিলো মা,
সেদিন কেন হেসেছিলাম সেটা ভেবে...”
সামিনের মুখ
গম্ভীর হয়ে গেছে, তার চোখের কোণে চিকচিক করে জল, চির অভিমানী ছেলের চিবুক ধরে
কপালে চুমো দেন তিনি।
হাত বাড়িয়ে সাগ্রহে বাইরে গাড়িতে ওঠার জন্য টান দেন।
৯
সে একটা টুকটুকে
লাল শাড়ি পরেছে। হাত ভর্তি রেশমি চুড়ি।
হাতে ধরা টকটকে
লাল ষোলটা গোলাপ সাজের সাথে খুব মানিয়ে গেছে।
সিঁড়ি বেয়ে দোতলায়
উঠতে উঠতে কাচের চুড়ির রুমঝুম তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো আজ দুপুরে।
গত দু’বছরে কুশি
আরও দু’চার ইঞ্চি লম্বা হয়েছে। আগের রোগাটে চিকণ ভাবটা কেটে গিয়ে ভরা বর্ষার
লাবণ্য ঝলমল করে তার শরীরে। ডাগর চোখ, ভরন্ত হাত পা আর দু’পায়ের চাঞ্চল্য যৌবনকে
সাদরে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত। কুশির শরীর উৎসুক, মন উন্মুখ। আগেকার সেই মনমরা
ভাবটা কেটে গিয়ে সেখানে ভীষণ সুন্দর একটা প্রাণের জোয়ার এসেছে। সেটা সে আজকাল
নিজেও টের পায়। আড়ালে আবডালে সেটা নিয়ে লজ্জা আর গর্ব দুইই তাকে শিহরিত করে। যৌবন
ব্যাপারটা যে শুধুই অস্বঃস্তি আর অনুতাপের নয় সেটা একটু একটু করে সে বুঝতে পারছে।
সেই বুঝতে
পারার পেছনে অর্ণবের একটা বড় ভূমিকা আছে।
এতোদিনকার
পিঠেপিঠি বেড়ে ওঠা, বন্ধু হিসেবে সহজ আর প্রাণখোলা ব্যবহার, নানাসময়ে সাহায্য,
পড়াশোনার সঙ্গী হওয়া এগুলো তো ছিলোই। তার ওপরে কুশির খারাপ লাগা, কষ্ট পাওয়া এগুলো
সবচাইতে কাছ থেকে দেখেছিলো অর্ণব। আজ দুপুরে ওর হাত ধরে রোম্যান্টিক কোনো কথাই
বলেনি ছেলেটা, সব বন্ধুদের সামনে হাঁটুগেড়ে বসে কুশির হাতে ফুলগুলো দিয়ে অসম্ভব
মনকাড়া একটা হাসি হেসেছিলো শুধু। ঠিক সে সময় ওর প্রিয় গানটা বাজছিলো ক্যাফের
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে।
ওই অপাপবিদ্ধ
হাসি, ওই ফুল আর নত হওয়া কুশিকে প্রথমবারের মতো ভয় পাইয়ে দেয়নি।
প্রথমবারের মত
জীবনে সে বুঝতে পারছিলো সে প্রার্থিত।
কোনো একজনের
কাছে।
সেই স্মৃতি
ফিরে ফিরে এসে পড়ন্ত দুপুরটাকে আরো রঙিন করে দেয়। চোখে রঙিন ঘোর, ঠোঁটে দুষ্টুহাসি-
রেডি হতে হবে বিকেলের জন্য। অন্য অতিথিদের মা বলেছেন যে!
দোতলায় উঠে
নিজের ঘরে ঢুকে সে দরজা বন্ধ করতে পেছন ফেরে তাড়াহুড়োয়। পর্দা টেনে দোর বন্ধ করে।
খিলটা লাগাতে
যাবে এমন সময়- ঘাড়ের পেছনে গরম নিঃশ্বাস!
চকিতে পেছন
ফিরতে গিয়ে বাধা।
পেছন থেকে কে
যেন শক্ত করে ধরে রেখেছে তার দুহাত। আতঙ্কে হালকা শব্দ করে, কিন্তু তাতে
বজ্রমুষ্টি শিথিল হয়না। আস্তে আস্তে লোকটা ওকে উল্টোদিকে ঘোরায়।
এ দু’বছরে কাঁধ
ছাড়িয়ে গালের কাছাকাছি চলে এসেছে কুশির গাল। সামিন অবাক হয়ে দ্যাখে, সে গালে কি চমৎকার
লাল আভা। হাতের মুঠোর ভেতর চাঁপাকলির মতো আঙুল, গালে, ঠোঁটে, গলায়, ঘাড়ে মোমের
মসৃণতা। তার ছোট্ট হরিণছানা এমন বনহরিণী
বনলো কবে?
কুশির চোখে যুগপৎ
আতঙ্ক আর বিস্ময়।
অবাক হওয়াটাকে
আরো উস্কে দিতে জোর করে শরীরের আরো কাছে টেনে আনে কুশিকে, এক হাতের বেষ্টনীতে
আটকায়।
কানের লতির
কাছে উষ্ণ নিঃশ্বাসের সাথে থেমে থেমে বলে,
“কুশি।
আমি।
এসেছি।
তোর জন্য।
শুধু তোর
জন্য।”
একহাতে কোমর
আটকে রেখে আরেক হাতে বইয়ের প্যাকেটটা দেয়।
“খোল।”
শরীরের চাপে
পিষ্ট,আটকে রাখা দম কিছুটা ছেড়ে হাতের ফুলগুলো কোনক্রমে টেবিলে রাখে সে।
মোড়ক খুলতেই
ছোট্টবেলার বিস্ময় আর আনন্দ ঝাঁপ দিয়ে পড়ে সুদূর অতীত থেকে!
অবাক হয়ে একবার
চায় সামিনের দিকে। সামিন তার অসম্ভব সুপুরুষ, তীক্ষ্ণ চোখের, পাতলা ঠোঁটের বুক
তোলপাড় করা হাসিটা হাসছে।
সেই হাসি, যেটা
দেখে অনেক দিন আগে ছোট্ট এক কিশোরী ব্যাঙ্কের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেও ঘামছিলো।
বারবার চোরাচোখে তাকাচ্ছিলো।
নির্নিমেষ।
কুশি ফের তাকায়
টেবিলে।
টিনটিনের ২৪ টা
বই। তার পাশেই ষোলটা টকটকে লাল গোলাপ।
এক জীবন তাকে ফিরিয়ে
নিয়ে যেতে চায় সোনালি কৈশোরে।
অন্য জীবন
হাতছানি দিয়ে ডাকে যৌবনের দ্বার খুলতে।
চোদ্দ আর
চব্বিশের প্রথম আলিঙ্গন ঘটেছিলো আচমকা, অপ্রস্তুত এবং অপ্রত্যাশায়!
ষোল আর
ছাব্বিশের প্রথম চোখাচোখি হয় দুরূহ আর অগম্য অনিশ্চয়তায়।
দু’জোড়া চোখ
অপলক পরস্পরের দিকে... ...
“দু’জনে কেহ কারে বুঝিতে নাহি পারে বোঝাতে নারে আপনায়
দু’জনে একা একা ঝাপটি মরে পাখা, কাতরে কহে
কাছে আয়”
***************************************************************
খুব চমৎকার লাগল
উত্তরমুছুনআপনার সমালোচনাগুলো এখানে লিখতে পারতেন। সবগুলো নয় অবশ্য। :)
মুছুন১৪ আর ২৪, ১৬ আর ২৬... প্রকাশভঙ্গীটা বেশ লেগেছে। মিষ্টি প্রেমের গল্প - একটা নাটক বানানো হলে সেটা মন্দ হবে না মনে হলো। মাঝেমাঝে এরকম নির্ভাবনার গল্প পড়তে আরাম লাগে খুব। :-)
উত্তরমুছুননাটক? উম্ম্, আমি ভাবছিলাম উপন্যাস করা যায় কী'না। নির্ভাবনার গল্প, যথার্থই বলেছেন। এই চরিত্রগুলো সময়ে বদলে গিয়ে কী হয় আমার দেখার ইচ্ছে ছিলো। কি মনে হয়, লিখবো?
মুছুন